বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০১ পূর্বাহ্ন
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ আজ থেকে ২০ বছর আগে শিমের আবাদ করত না কৃষকরা। কৃষক-কৃষাণীরা বাড়ির উঠানে, ঘরের চালে, পুকুর পাড়ে জাংলার মধ্যে শিম চাষ করত। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বেচত। তখন কেজিতে না থোক বা ভাগা দিয়ে বেচত শিম বলেন ঝিনিয়া গ্রামের ৮২ বছরের বৃদ্ধ মোবারক আলী সরকার। তার ভাষ্য এখন সেই শিম ২৬০ হতে ১৪০ টাকায় কেজি কিনতে হচ্ছে। অনেকে এখন শিমের আবাদ করছে ক্ষেতের মধ্যে। আগাম শিম চাষাবাদ করে অনেকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারি গ্রামের আবু তালেব দীর্ঘ ১০ বছর ধরে শিম চাষ করে আসছেন। শুরুতেই অল্প জমিতে শিম চাষ শুরু করেন। আগাম শিম চাষ করে ব্যাপক লাভবান হওয়ায় গত ৫ বছর ধরে প্রায় ৪০ শতক জমিতে বানিজ্যিক ভাবে শিম চাষাবাদ শুরু করে তালেব। তার দেখা দেখি ওই গ্রামের সাইফুল ইসলাম, আতোয়ার, মালেকা বেগম শিম চাষ শুরু করেন। বর্তমানে ওই গ্রামটি শিমের গ্রামের পরিনত হয়েছে। মাঠজুড়ে শিম ক্ষেত এলাকার শোভাবর্ধন করেছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে শিম চাষ শুরু করেন বলে বলেন আবু তালেব। তার ভাষ্য চলতি মৌসুমে ৪০ শতক জমিতে শিম চাষ করেছেন। আজ থেকে ২০ দিন আগে প্রতি কেজি শিম বিক্রি করেছেন ২৬০ টাকা কেজি। বর্তমানে ২০০ হতে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৪০ শতক জমিতে শিম চাষাবাদে এ পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তিনি ৩ লাখ টাকার শিম বিক্রি করবেন।
ওই গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেশি আবু তালেবের দেখাদেখি তিনিও শিম চাষ শুরু করেন। চলতি মৌসুমে তিনিও ৩৫ শতক জমিতে শিম চাষ করেছেন। বেড পদ্ধতিতে জাংলা দিয়ে শিম চাষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে। তিনি আশা করছেন শিম বিক্রি করে দেড়লাখ টাকা লাভ করবেন।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক অজিত কুমার রায় বলেন, আতোয়ার , সাইফুল ও মালেকা দীর্ঘ দিন থেকে শিম চাষাবাদ করে আসছেন। শিম চাষ করে তারা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। প্রতিদিন সকালে অনেক পাইকার এবং খুচরা ক্রেতা এসে শিম নিয়ে যায়। দীর্ঘদিন থেকে শিম বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করে আসছেন তারা। তাদের পরিবার এখন স্বাবলম্বী।
পৌর সভার আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, শীতকালে শিম অত্যন্ত সুস্বাদু সবজি। বাজারে প্রচুর বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতের শিম। তিনি প্রতিদিন শিম কিনে থাকেন বাজার হতে। বর্তমানে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ হতে ১৪০ টাকা দরে। তবে কিছু দিনের মধ্যে এর দাম কমবে।